অধিভুক্ত সাত কলেজের সমস্যা সমাধানের রূপরেখা প্রস্তুত, যাচ্ছে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে

আরও পড়ুন

অধিভুক্ত সাত কলেজের সমস্যা সমাধানের রূপরেখা প্রস্তুত, যাচ্ছে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ : ফাইল-ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সব ধরনের সমস্যা সমাধানে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রস্তাবনা অনুযায়ী অধিভুক্ত সাত কলেজের পুরনো ল্যাবরেটরিগুলোর আধুনিকায়ন করা হবে, নতুন নতুন বিভাগ ও ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা হবে, শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং চাকরির বাজারে যেসব কোর্সের চাহিদা কম সেগুলো কমিয়ে আনা হবে।

$ads={1}
জানা যায়, আগামী মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এ প্রস্তাবনা পাঠাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ পরিকল্পনা প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাইয়ের পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে বৈঠক করে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই এটি চূড়ান্ত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, শিক্ষার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সরকারি সাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে আড়াই লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রাম করতে দেখা গেছে।

$ads={2}
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, সাত কলেজের জন্য আমরা আলাদা কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছি। কলেজগুলোর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা সাত কলেজ কী কী রিসোর্স রয়েছে, কতজন শিক্ষক রয়েছেন, বিজ্ঞানের বিভাগগুলোর জন্য ল্যাবরেটরি আছে কী না এসব বিষয়ে প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছি।

তথ্যমতে, দক্ষ জনশক্তি তৈরির উদ্দেশ্যে কলেজগুলোতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই),তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউট (আআইটি) এবং ডিপ্লোমা কোর্স অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর পাশাপাশি, চাকরির বাজারে চাহিদা কম এমন কিছু কোর্সের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে।


এছাড়া ব্যবহারিক ক্লাস নেওয়ার জন্য কলেজগুলোর পুরনো ল্যাবরেটরিগুলো সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা হবে। এ কাজে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করেছে ঢাবি। এছাড়াও, শিক্ষকরা যেন কলেজগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারেন, সেজন্য তাদেরকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।


সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের সাতটি কলেজ অধিভুক্ত হওয়াতে আমরা একই সিলেবাসে পাঠদানের সুযোগ পেয়েছি। শ্রেণি পাঠদানের বাইরে ল্যাবগুলোও আধুনিকায়ন হচ্ছে।

অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই এ সাতটি কলেজের শিক্ষার মান দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কলেজগুলোর ল্যাবের জন্য আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা দিচ্ছেন। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরপরেও কিছু সমস্যা থেকে গেছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছেন।

অধিভুক্ত এসব কলেজগুলোর সেশনজট কমাতে এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, সরকার যে পরিকল্পনা করে সাত কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত করেছিল, নানা সংকটে সেই উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। অবকাঠামো, শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যায় কমেনি সেশনজট। এসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হলে অনেক সংকট কমে যাবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন