চাকরির প্রস্তুতি : পরিমাপের যত একক

আরও পড়ুন

Job Readiness: As many units of measurement
চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি পর্বে আজ থাকছে পরিমাপের একক


যে আদর্শ পরিমাণের সাথে তুলনা করে কোনো ভৌত রাশিকে পরিমাপ করা হয় তাকে, পরিমাপের একক বলা হয়। অর্থাৎ, কোনো ভৌতরাশির যে নির্দিষ্ট ও সুবিধাজনক পরিমাণকে প্রমান ধরে প্রদও রাশিটি বা সমজাতীয় রাশিসমূহকে পরিমাপ করা হয়, তাকে ওই রাশির একক বলে। কোন ভৌত রাশি পরিমাপের জন্য দুইটি জিনিসের প্রয়োজন হয়। একটি হল রাশিটির মান এবং অন্যটি একক। পরিমাপের একক মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কারণ মানুষ প্রথমত এই এককগুলোর মাধ্যমেই পরিমাপ ব্যবস্থার সৃষ্টি করেছিল এবং এর প্রয়োজনেই সৃষ্টি হয়েছিল গণিতের, আর গণিতের মাধ্যমেই বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে।

$ads={1}
১৭৪০ সালের ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমি এর এক জরিপের ভিত্তিতে ফ্রান্সে ১৯৭৫ সালে  একটি কনফারেন্সে বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিমাপ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। একে International System of Uits বা (SI) unit বলা হয়। বর্তমানে এই পদ্ধতিতে সাতটি মৌলিক একক যেমন (মিটার, কিলোগ্রাম, সেকেন্ড, অ্যাম্পিয়ার, কেলবিন মৌল ও ক্যান্ডেলা)। এবং দুটি পরিপূরক একক (রেডিয়াম ও ষ্টেরেডিয়ান) একক বিদ্যামান রয়েছে।

বিভিন্ন দেশে পরিমাপের জন্য বিভিন্ন পরিমাপ পদ্ধতি প্রচলিত থাকায় আন্তর্জাতিক ব্যবসায়
বাণিজ্য ও আদান-প্রদানে সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই, আন্তর্জাতিক ব্যবসায়-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরিমাপ করার জন্য মেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রান্সে প্রথম এ পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। বাংলাদেশে ১৯৮২ সালের ১ জুলাই থেকে মেট্রিক পদ্ধতিতে পরিমাপ চালু হয়। বর্তমানে দৈর্ঘ্য, ওজন, এবং আয়তন পরিমাপের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিগুলো প্রচলিত রয়েছে।

১. দৈর্ঘ্য পরিমাপের পদ্ধতি ও একক:

জ্যামিতিক পরিমাপে, দৈর্ঘ্য হল একটি বস্তুর সর্বশেষ বর্ধিত মাত্রা। আন্তর্জাতিক পরিমাপ ব্যবস্থা অনুসারে দৈর্ঘ্য হল সেই পরিমাণ যা মাত্রার দূরত্বকে প্রকাশ করে। অন্যভাবে বলতে গেলে "দৈর্ঘ্য" হল, একটি বস্তুর মাত্রার পরিমাপক। দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক সমূহ নিচে দেয়া হলো:

  • ১০ মিলিমিটার    = ১ সেন্টিমিটার
  • ১০ সেন্টিমিটার    = ১ ডেসিমিটার
  • ১০ ডেসিমিটার     = ১ মিটার
  • ১০০ সেন্টিমিটার    = ১ মিটার
  • ১০ মিটার    = ১ ডেকামিটার
  • ১০ ডেকামিটার    = ১ হেক্টোমিটার
  • ১০ হেক্টোমিটার    = ১ কিলোমিটার
  • ১ কিলোমিটার    = ১০০০ মিটার
  • ১ মিটার    = ৩৯.৩৭ ইঞ্চি (প্রায়)
  • ১ কিলোমি.    = ০.৬২ মাইল (প্রায়)
  • ১ ইঞ্চি    = ২.৫৪ সে.মি.
  • ১ মাইল    = ১.৬০ কিলোমিটার
  • ১ নটিক্যাল মাইল    = ১.৮৫৩ কিলোমিটার/ ১৮৫৩.১৮ মিটার
  • ২০০ নটিক্যাল মাইল    = ৩৭০ কিলোমিটার (প্রায়)

দেশীয় পদ্ধতিতে বস্ত্রের দৈর্ঘ্য পরিমাপের এককগুলো নিম্নরুপ:

  • ৩ যবোদার    = ১ আঙ্গুলী
  • ৩ আঙ্গুলী    = ১ গিরা
  • ৩ গিরা    = ১ হাত
  • ১৬ গিরা    = ১ গজ
  • ১৮ ইঞ্চি    = ১ হাত
  • ৩৬ ইঞ্চি    = ১ গজ
  • ২ হাত    = ১ গজ
  • ২০ গজ    = ১ থান

$ads={2}
দেশীয় ও ব্রিটিশ পদ্ধতিতে ভূমির/জমির ক্ষেত্রফল পরিমাপ এর একক নিম্নরুপ :

  • ১ বর্গ হাত    = ১ গন্ডা
  • ২০ গন্ডা    = ১ ছটাক
  • ১ ছটাক    = ৫ বর্গগজ
  • ১৬ ছটাক    = ১ কাঠা
  • ১ কাঠা    = ৮০ বর্গগজ
  • ১ বিঘা    = ২০ কাটা/ ১৬০০ বর্গগজ
  • ১০৮ ঘনহাত    = ১ কুয়া
  • ৩৬৪ ঘনফুট    = ১ কুয়া
  • ১০০০ ঘনফুট    = ২.৭৫ কুয়া
  • ১৪৪ বর্গ ইঞ্চি    = ১ বর্গফুট
  • ৯ বর্গফুট    = ১ বর্গগজ
  • ১৭৬০ গজ    = ১ মাইল
  • ৪৮৪০ বর্গগজ    = ১ একর

২. মেট্রিক ও দেশীয় পদ্ধতিতে ওজন পরিমাপের একক:
 
একটি বস্তুর ওজন নির্ণয়ে সেই বস্তুর ভর ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন তুমি একটি পরিমাপক এ দাঁড়াও তখন তুমি নিজের শরীরের ভর জানতে পারো।
মেট্রিক পদ্ধতিতে পরিমাপের ক্ষেত্রে, ভরের সবচেয়ে প্রচলিত দুইটি একক হল গ্রাম এবং কিলোগ্রাম। নিম্নে ওজন পরিমাপের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত একক সমূহ দেয়া হলো:
  • ১০ মিলিগ্রাম    = ১ সেন্টিগ্রাম
  • ১০ সেন্টিগ্রাম    = ১ ডেসিগ্রাম
  • ১০০ সেন্টিগ্রাম    = ১ গ্রাম
  • ১০ ডেসিগ্রাম    = ১ গ্রাম
  • ১০ গ্রাম    = ১ ডেকাগ্রাম
  • ১০ ডেকাগ্রাম    = ১ হেক্টোগ্রাম
  • ১০ হেক্টোগ্রাম    = ১ কিলোগ্রাম
  • ১০ কিলোগ্রাম    = ১ কুইন্টাল
  • ১০ কুইন্টাল    = ১ মেট্রিক টন
  • ১০০০ কিলোগ্রাম    = ১ মেট্রিক টন

দেশীয় পদ্ধতিতে পরিমাপের একক:

  • ৬ রতি    = ১ আনা/ ১ তোলা
  • ১৬ আনা    = ১ ভরি
  • ৫ ভরি    = ১ ছটাক
  • ৪ ছটাক    = ১ পোয়া
  • ১৬ ছটাক    = ১ সের
  • ৪০ সের    = ১ মণ

৩. তরলের পদার্থের আয়তন পরিমাপ পদ্ধতি ও একক:

যেসব পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন ও ওজন আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার নেই তাদেরকে তরল পদার্থ বলা হয়। যেমন - পানি, দুধ, তেল ইত্যাদি। 

তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের মূল একক লিটার। নিম্নে তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের এককগুলো দেয়া হলো: 

  • ১০ মিলিলিটার    = ১ সেন্টিলিটার
  • ১০ সেন্টিলিটার    = ১ ডেসিলিটার
  • ১০ ডেসিলিটার    = ১ লিটার
  • ১০০ সেন্টিলিটার    = ১ লিটার
  • ১০ লিটার    = ১ ডেকালিটার
  • ১০ ডেকালিটার    = ১ হেক্টোলিটার
  • ১০ হেক্টোলিটার    = ১ কিলোলিটার
  • ১০০০ লিটার    = ১ কিলোলিটার
  • ১ ঘনফুট    = ২৮৬৭ লিটার (প্রায়)
  • ১ গ্যালন    = ৪.৫৫ লিটার
  • ১ কিউসেক    = ২৮.৩১৭ লিটার
  • ১ ব্যারেল    = ১৫৯ লিটার

ক্ষেত্রফল পরিমাপ পদ্ধতি ও একক:

কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা দ্বারা আবদ্ধ মান হলাে ক্ষেত্র, এবং এই ক্ষেত্রের পরিমাপকে বলে 
ক্ষেত্রফল। ক্ষেত্রফল পরিমাপের একককে বর্গ একক হিসেবে প্রকাশ করা হয়। নিম্নে ক্ষেত্রফল পরিমাপের বিভিন্ন সূত্র সমূহ দেয়া হলো:
  • আয়তকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = (দৈর্ঘ্য x প্রস্থ) বর্গ একক
  • বর্গাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = (বাহু)² বর্গ একক
  • ত্রিভূজকারক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ =  1/2 (ভূমি x উচ্চতা) একক
  • সামন্তরিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = (ভূমি x উচ্চতা) বর্গ একক
  • আয়তকার ক্ষেত্রের পরিসীমা = ২ (দৈর্ঘ্য + প্রস্থ) একক
  • ঘনকের সমগ্র তলের ক্ষেত্রফল = ৬ x (দৈর্ঘ্য)² বর্গ একক
  • আয়তকার ঘনবস্তুর আয়তন = (দৈর্ঘ্য x প্রস্থ xউচ্চতা) ঘন একক
  • ঘনকের আয়তন = (দৈর্ঘ্য)³ ঘন একক

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন